খবর বরিশাল ডেস্ক ॥ সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিতদের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে আজ বুধবার। এদিন সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের শপথকক্ষে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজেও এবার রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন, তারপর অন্যদের শপথ পড়াবেন।
সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে শুরু হবে নতুন সরকার গঠনের পর্ব। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হওয়ায় বর্তমান দলটি পুনরায় সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার নাগাদ নতুন সরকার দায়িত্ব নিতে পারে। মঙ্গলবার বিকেলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামের তালিকার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বেদনাথ। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে গত সাতই জানুয়ারি ২৯৯ আসনে ভোট হয়েছে। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় নওগাঁ-২ আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়নি। যে ২৯৯টি আসনে ভোট হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একমাত্র ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল আটকে আছে। কাজেই বুধবার ২৯৮টি আসনে নির্বাচিত নতুন জনপ্রতিনিধিদেরকেই শপথ পড়ানো হবে। তবে গত সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতরা বুধবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন কি-না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইসির গেজেট: সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এর ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। গেজেটে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য থাকে। মঙ্গলবার দুপুরে নিজেদের বৈঠক শেষে গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দেন প্রধান নির্বাচন কমিশার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপর বিকেলে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ‘ইতোমধ্যেই গেজেট প্রকাশ করা হয়ে গেছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এর কপি সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো হবো,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বেদনাথ। গেজেট হাতে পেলে স্পিকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শপথ আয়োজনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে সংসদ সচিবালয়। সংসদ ভবনের নিচতলায় ‘শপথ কক্ষে’ নবনির্বাচিতদের শপথ পড়াবেন স্পিকার। বুধবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদের বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি জানান, ‘শপথ গ্রহণের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন, সবই আমরা গ্রহণ করেছি। সব ঠিক থাকলে বুধবার সকালে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।’
এদিকে আগামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে বঙ্গভবন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন বাসস’কে বলেন, “রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন নতুন মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।” বঙ্গভবনের মুখপাত্র জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন নতুন মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। এ উপলক্ষে প্রায় এক হাজার অতিথিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে বঙ্গভবন। এদিকে আজ বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার আকার এবং নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকবেন, সে বিষয়ে তিনি এখনও নির্দেশনা পাননি।
আগামীকাল নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্যরা শপথ নেবেন। আজ সকাল ১০টায় একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। গত ৭ জানুয়ারী, ২৯৯টি আসনে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২২২টি আসনে, জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয়ী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা-ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি করে আসন পেয়েছে। নির্বাচনে একটি আসনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। এদিকে ২৯৮ জন সংসদ সদস্যের তালিকাসহ গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের ফলাফলের সরকারি গেজেট প্রকাশের পর, স্পিকার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে স্পিকার সংসদ সদস্যদের শপথ পড়াতে অক্ষম বা অনিচ্ছুক হলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে শপথ পাঠ করাবেন। যদি কোনো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নেন, তাহলে তার আসন শূন্য হবে। সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনপ্রাপ্ত দলের এমপিরা প্রথমে শপথ নেন এবং পরবর্তীতে অন্যরা।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply